আল্লাহর আইন, ইসলাম বুকে ধারণ করে রাজনীতি, কোরআন শরীফ, ঈমানের পথ ইত্যাদি বুলি আউরিয়ে রাজনীতি যারা করে তাদের সচেতন মিথ্যাচার দেখুন - - -
শাহবাগ আন্দোলনের শুরুর মুহুর্ত থেকে ছিলাম, সাধারণত রাতে বাসায় চলে আসি, একদিন সকালে ফেসবুকে হঠাৎই এ ছবিটা দেখে আঁতকে উঠি! শাহবাগে তরুনী ধর্ষণ! সেখানে যারা-যারা ছিলো অনেককেই ব্যাক্তিগতভাবে এবং অনলাইন সম্পর্কের জেরে চিনি, ভয়ংকর এ সংবাদ শুনে খুলে দেখলাম নিচের ছবিটা - - -
ভেসে উঠলো নিচের এই চিত্র -
ভয়ংকর মিথ্যা কিছু কথাকে টাইপ করে ইমেজ বানিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার নামে ছেড়ে দেয়া হলো শাহবাগে আন্দোলনকারীদের ধর্ষক সাজিয়ে! ''ধর্মীয় রাজনীতিবিদ'' বলে কথা!
পরদিন অফিসে বসে দেখলাম আমার ইউনিভার্সিটির এক বড় আপু
শেয়ার দিলো নিচের ছবিটা, প্রথম আলোর বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে সে শাহবাগ আন্দোলনে মারা গেছে - - -
গলায় দড়ি দিয়ে মরে গেছে বলা হচ্ছে ছবির যে ছেলেটা তাকে আমার অফিসের অনেকেই চেনে। বন্ধুরা ওকে ডাকে 'দুখু সুমন' বলে। জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারে নাটক করে। এডিট করা উপরের ছবিটা বানানো হয়েছে নিচের ছবিটা থেকে - - -
কীসব প্রচন্ড মিথ্যার বেশাতি খুলে বসেছে ইসলামী ভাবধারী বলে কথিত সংগঠন জামাত-শিবির চক্র!
উপরের ছবিটা আসলে বানানো হয়েছে নিচের এ ছবিটি থেকে - - -
এ ছবিটাকে মেরে দিয়ে বানানো হলো এ ছবি - - -
শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরের একটা ছবি দেখি - - -
এর সাথে মেশানো হল এই ছবিটির অংশবিশেষ - - -
মিশিয়ে শাহবাগকে সেক্স-জোন বানানো হলো এ ছবিটিতে - - -
শাহবাগের ছবি হিসেবে পোস্ট দেয়া হলো এ ছবিটা - - -
উপরের ছবিটাকে একটা ফানি ছবি হিসেবে অনেকদিন আগেই নানান জায়গায় দেখেছি! একে শাহবাগের ছবি ঘোষণা দেয়া হলো! তাইলে
এই পোস্টে যে ২০১২ সালের আগষ্টে একই ছবি এসেছে!
শাহবাগ আন্দোলনের অন্যতম নেতা ইমরান এইচ সরকারের ছবি পাশে বসিয়ে
পোস্ট করা হলো এ ছবিটি - - -
ক্রমাগত ঘোষণা দেয়া হচ্ছে শাহবাগের সব মানুষ নাস্তিক, এরা আল্লাহ-খোদা মানে না, ব্যাভিচার করে বেড়ায় ইত্যাদি। ইসলাম নিয়ে প্রতারক গোষ্ঠীর 'সব নাস্তিক' প্রচারের কিছু প্রমাণ পাওয়া যায় কিনা দেখি। শাহবাগের সবাই ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক হলে এরা কারা - - -
শাহবাগের সবাই ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক হলে এরা কারা - - -
শাহবাগের সবাই ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক হলে এরা কারা - - -
শাহবাগের সবাই ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক হলে এরা কারা - - -
শাহবাগের সবাই ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক হলে ইনি কে - - -
শাহবাগ আসলে কোন রাস্তা নয়, গড়ের মাঠ, দেখুন না
শেয়ার দেয়া হলো শাহবাগের
ঘাস-মাটির মাঠে বসে কেমন নেশা করছে কতিপয় নেশারু - - -
এসব প্রকান্ড মিথ্যাচার কি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা? কতিপয় বিপথগামী শিবির কর্মীর দুষ্টুমী? না, তারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই লালন করে এহেন মিথ্যাচারী মনোভাব। এদের রাজনীতির মুল অস্ত্র মিথ্য রটানো, প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কুৎসা প্রচার করা। কুৎসাকারী না হলে কোন ইসলামপ্রেমী মুসলমান কাবা শরীফ নিয়ে মিথ্যা কথা বলে? আমার দেশ পত্রিকায় ৬ ডিসেম্বর ২০১২ তে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট দেখুন - - -
একই দিনে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার একটি রিপোর্ট দেখুন - - -
এবার
এই ছবির উৎস দেখুন, ১৮ অক্টোবর ২০১২ তে প্রকাশিত কাবার গিলাফ পরানোর সময় তোলা ছবিটিকে একটি আরবি সাইট থেকে নিয়ে বাংলাদেশের রাজাকারদের বাঁচাতে মানববন্ধন নাম দেয়া হয়েছে দেশের দুইটা জাতীয় দৈনিকে - - -
এ মিথ্যাবাদী এবং প্রতারকদের একটা প্রকৃষ্ঠ প্রমাণ পেলাম আমার সহকর্মী মাহমুদ আপেলের একটি সাম্প্রতিক পোস্টে - - -
পরিচিত এক ছোট ভাই ইদানিং ফেসবুকে বেশ সময় দিচ্ছে। সারাক্ষন ফেসবুকে বসে থাকে। অথচ গত তিন বছরে তাকে ৩ বার ফেসবুকে বসতে দেখেছি বলে মনে করতে পারছিনা। যাই হোক, কদিন ধরে ফেসবুক লগ ইন করলেই দেখছি ছোট ভাইটা শাহবাগ আন্দোলনের বিপক্ষে বেশ সোচ্চার হয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছে, বাঁশের কেল্লা সহ অন্যান্য শিবিরের পেজে শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে যে প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে তা শেয়ার দিচ্ছে, দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার নিউজ শেয়ার দিচ্ছে, ব্লগার রাজীবের মৃত্যুর পক্ষে কথা বলছে। আমি বেশ অবাক হয়ে গেলাম। এই ছেলেটা কখন কিভাবে শিবিরের ফাঁদে পড়ছে কে জানে। খুব মন খারাপ লাগল, এই বাচ্চা ছেলেটাও শিবিরে যোগ দিছে!! অকে ফেসবুকে নক করেও কোন জবাব পেলামনা। সাত-পাঁচ না ভেবে তার নাম্বার যোগার করে ফোন দিলাম। বললাম আমার অফিসের দিকে এলে যেন আমার সাথে দেখা করে। তো আজ সকালে ও আমার অফিসে এসে আমাকে ফোন দিল। দেখা করে ওর সাথে কথা বললাম। চা খেয়ে ছোটভাইটাকে প্রশ্ন করলাম, কিছু মনে কোরোনা তুমি শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে যা লিখছো তাতো ঠিক না। ছোট ভাই আমার কথা শুনে বেশ কৌতুহলী দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকাল। আমি ভাবলাম আমি বোধহয় প্রশ্নটা ঠিকভাবে করিনি। তাই আবার প্রশ্ন করলাম, তুমি শাহবাগের এই আন্দোলন সম্পর্কে কতটুকু জানো? ছোট ভাই এবার আরো কৌতুহলী। আমি বেশ অপ্রস্তুত হয়ে যাচ্ছি সেই সাথে ছোট ভাইটাকেও অপ্রস্তুত করে দিচ্ছি বলে মনে হল। আমার একটু সন্দেহ হল, আমি অন্যভাবে প্রশ্নটা করার চেষ্টা করলাম। আচ্ছা তুমি সারাদিন ফেসবুকে বসে থাকো কেন, স্কুল থাকেনা? এবার ও যা বলল তা শুনে আমিতো হতবাক। ও বলল ও নাকি ফেসবুক ব্যবহার করেনা। সেকি কথা? আমি তখন অকে ফেসবুক লগ ইন করে ওর এ্যাকাউন্ট টা দেখালাম। ও তো পুরাই অবাক হয়ে গেল। ওর ছবি ও নাম দেয়া অথচ এই এ্যাকাউন্ট ও ব্যবহার করেনা। ছেলেটা প্রায় কান্না করবে এমন অবস্থা। আমি বুঝিয়ে-সুজিয়ে অকে বললাম আমি দেখছি কি করা যায়। তারপর অকে বাসায় পাঠিয়ে দিলাম।
এরপর আমার উপলব্ধি হল বাঁশের কেল্লার মত ছাগু পেজে এত লাইক আর শেয়ার কেন হয়। আসলে শিবিরের একটা চক্রই আছে যারা এরকম ফেক আইডি খুলে লাইক আর শেয়ার দিতে থাকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য। আর এই বেশি বেশি লাইক কমেন্ট/শেয়ার দেখে সেখানে যোগ দেয় আরো কিছু ধর্মপ্রাণ মুসলমান। কিন্তু সবাই তো বোঝেনা যে শিবিরের ফেক এ্যাকাউন্ট সংখ্যা বাংলাদেশের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
অর্থ্যাৎ এ মিথ্যাযজ্ঞ এবং প্রতারণাযজ্ঞ পরিকল্পিতভাবে দীর্ঘদিন ধরে এরা দলীয়ভাবেই করছে। নিজের
ফেসবুক অভিজ্ঞতাথেকে মনে করে দেখুন, নিম্নরূপ ফ্রেন্ড-রিকোয়েস্ট কে না পেয়েছেন?
জামাত-শিবির কোন আদর্শবান রাজনৈতিক দল নয়, প্রতারক এবং মিথ্যাচারী চক্র, এদের ত্যাগ করুন।